বিশেষ প্রতিনিধি দুর্নীতির মামলায় ১০ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিমের জামিন আবেদনের ওপর শুনানির জন্য ১ আগস্ট দিন ধার্য করেছেন আদালত।সোমবার (৬ জুন) আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম জামিন আবেদনের শুনানির জন্য আগামী ১ আগস্ট পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠানোর আদেশ দেন।আজ আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।গত ২৪ মে আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় জামিন আবেদন করেছিলেন হাজী সেলিম।
এর আগে গত ২২ মে হাইকোর্টের রায় অনুসারে আত্মসমর্পণ করার পর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭’র বিচারক শহিদুল ইসলাম পুরান ঢাকা এ সংসদ সদস্যের জামিন নামঞ্জুর করেন। এ সময় আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাকে কারাগারে ডিভিশন ও সুচিকিৎসার আবেদন জানান। বিচারক কারাবিধি অনুযায়ী জেল কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন।৯ মার্চ অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় হাজী সেলিমকে বিচারিক আদালতের দেওয়া ১৩ বছর সাজা কমিয়ে ১০ বছর কারাদণ্ড বহাল রেখে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ।রায়ে তিন বছরের দণ্ড থেকে খালাস পান হাজী সেলিম। দুই বিচারপতির সইয়ের পর ৬৮ পৃষ্ঠার রায়ের কপি পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে তাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়। এ সময়ের মধ্যে আত্মসমর্পণ না করলে তার জামিন বাতিল করে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
তার আগে গত ৩০ এপ্রিল সন্ধ্যায় থাইল্যান্ডের উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়েন হাজী সেলিম। আদালতের দণ্ড মাথায় নিয়ে তার দেশ ছাড়ার ঘটনায় শুরু হয় বিতর্ক। তখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানান, হাজী সেলিম জরুরি চিকিৎসার জন্য ব্যাংককে গিয়েছিলেন। আইন মেনেই বিদেশে গেছেন এবং আইন মেনেই আবার চলে আসবেন।এরপর গত ৫ মে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে দেশে ফেরেন হাজী সেলিম। দেশে ফিরেই লালবাগে তার নির্বাচনী এলাকার শাহানি বেগম নামে স্থানীয় এক বাসিন্দার জানাজায় অংশ নেন। পরে লালবাগ থেকে আজিমপুর কবরস্থানে গিয়ে স্ত্রীর কবর জিয়ারত করেন তিনি।
২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে লালবাগ থানায় অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুদক। এ মামলায় ২০০৮ সালের ২৭ এপ্রিল তাকে দুই ধারায় ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। ২০০৯ সালের ২৫ অক্টোবর এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন হাজী সেলিম। ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি হাইকোর্ট এক রায়ে তার সাজা বাতিল করেন।পরবর্তী সময় হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে দুদক। ওই আপিলের শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি হাইকোর্টের রায় বাতিল করে পুনরায় শুনানির নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। ২০২১ সালের ৯ মার্চ বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।